সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে, যা প্রত্যাশিত টেকনিক্যাল চিত্রের বিপরীত ছিল। গত সপ্তাহে, এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে, এবং 1.0526 লেভেল অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা দৈনিক টাইমফ্রেমে সাইডওয়েজ চ্যানেলের উপরের সীমানা হিসেবে কাজ করছে। এই সপ্তাহে মূলত নিম্নমুখী প্রবণতাই প্রত্যাশিত ছিল; তবে, মার্কেটে উর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে ট্রেডিং শুরু হয়েছে।
আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম যে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ঘটে যাওয়া বিতর্কিত ঘটনাপ্রবাহ সোমবার মার্কেটের মুভমেন্টে প্রতিফলিত হবে। পুরো দিন জুড়ে, মার্কিন ডলারের দরপতন হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন বা ইউরোজোন, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচকগুলো এই মুভমেন্টের মূল অনুঘটক ছিল না। ইউরোজোনের মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার তুলনায় কম হ্রাস পেয়েছে, যা ইউরোর জন্য ইতিবাচক সংকেত। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের মূল ISM ম্যানুফ্যাকচারিং PMI-এর ফলাফল প্রত্যাশিত মানের চেয়ে দুর্বল ছিল। তবুও, আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কিন ডলারের এই দরপতনের প্রধান কারণ নয়।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের চার্টে, সোমবার মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মূল্য 1.0359 লেভেল থেকে বাউন্স করেছিল, তবে হোয়াইট হাউসে উত্তপ্ত পরিস্থিতির ফলে সোমবার মার্কেটে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে, যা কেউ পূর্বানুমান করতে পারেনি। মূল্য 1.0451 লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যাওয়ার পরে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারত, যদিও সম্ভাব্য মুনাফা প্রায় 30 পিপসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মাঝারি-মেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে এবং মূল্য দৈনিক চার্টে সাইডওয়েজ রেঞ্জে অবস্থান করছে। আগের মতোই, ইউরোর দরপতনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনও মার্কিন ডলারের পক্ষে বেশি অনুকূল। মূল নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে কয়েকবার স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা দেখা যেতে পারে, তবে আমরা শিগগিরই স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করছি।
মঙ্গলবার, ইউরোর দরপতন শুরু হতে পারে। ট্রাম্প চীনের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন, এবং সোমবার ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পুরোপুরি যৌক্তিক ছিল না। এছাড়াও, দৈনিক টাইমফ্রেমে সাইডওয়েজ রেঞ্জ এবং ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের ব্রেক এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে।
5-মিনিটের চার্টে, মঙ্গলবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851।
মঙ্গলবার, ইউরোজোনে বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা দিনের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বিবৃতি মার্কেটে বাড়তি অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।