logo

FX.co ★ মার্কিন স্টক মার্কেটের আপডেট: ১১ এপ্রিল – S&P 500 ও নাসডাক সূচকের তীব্র দরপতন

মার্কিন স্টক মার্কেটের আপডেট: ১১ এপ্রিল – S&P 500 ও নাসডাক সূচকের তীব্র দরপতন

বৃহস্পতিবারের নিয়মিত ট্রেডিং সেশন শেষে মার্কিন ইকুইটি সূচকগুলোতে বড় ধরনের লোকসানের সাথে লেনদেন শেষ হয়েছে। S&P 500 সূচক 3.46% হ্রাস পেয়েছে, নাসডাক 100 সূচক 4.31% এবং ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ 2.50% হ্রাস পেয়েছে।

ডলার দৈনিক সর্বোচ্চ দরপতনের পরে আরও দুর্বল হয়েছে—যা গত তিন বছরে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। একই সময়ে, ইকুইটি ও বন্ড মার্কেটে আবারও বিক্রির প্রবণতা ফিরে এসেছে, কারণ বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের নতুন উত্তেজনা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও দুর্বল করেছে। ইউরোর মূল্য তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছেছে।

মার্কিন স্টক মার্কেটের আপডেট: ১১ এপ্রিল – S&P 500 ও নাসডাক সূচকের তীব্র দরপতন

এশিয়ার স্টক সূচকগুলো টানা তৃতীয় সপ্তাহ ধরে দরপতনের ধারায় রয়েছে, যেখানে হোয়াইট হাউসের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক 145%-এ উন্নীত করার ঘোষণার পর পূর্বের স্বস্তি হঠাৎ মিলিয়ে গেছে। ইউএস ট্রেজারি বন্ডগুলোতেও দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিরাপদ বিনিয়োগস্থল খুঁজছে—এর প্রমাণ হিসেবে ইউরো 1.6% লাফ দিয়েছে এবং সুইস ফ্রাঁ গত দশকের সর্বোচ্চ লেভেল ছুঁয়েছে। স্বর্ণের দামও নতুন রেকর্ড গড়েছে।

যেখানে একদিন আগেই ট্রাম্পের ৯০ দিনের শুল্ক মুলতবির ঘোষণায় বাজারে বড় ধরনের র্যালি দেখা গিয়েছিল, সেখানে বৃহস্পতিবারের সেল-অফ স্পষ্ট করেছে—প্রস্তাবিত আলোচনার কার্যকারিতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর সংশয় রয়েছে এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে ঘন ঘন পরিবর্তনের ফলে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন সরকার এবং অর্থনীতির ওপর আস্থা হারাচ্ছে। এ অবস্থায় আশ্চর্যের কিছু নেই যে, স্বল্প বিরতির পর পুনরায় মার্কিন স্টক, বন্ড ও ডলার বিক্রির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বিনিয়োগকারীরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল; উপেক্ষা করছে—যেমন মার্চে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হারে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস, বরং তারা ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির অস্থিরতার দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। মার্কেটের ট্রেডাররা এখন মূলত শুল্কের প্রভাব নয়, বরং হোয়াইট হাউসের নীতিগত অনিশ্চয়তার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে—যা কর্পোরেট আয়ের পূর্বাভাসকে আরও জটিল করে তুলছে।

এর পাশাপাশি, বাণিজ্যযুদ্ধের তীব্রতা এবং চীনের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কা আরও জোরদার হয়েছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে বৈশ্বিক অর্থনীতি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। কর্পোরেট মুনাফার হ্রাস সরাসরি ইকুইটি মার্কেটকে চাপের মুখে ফেলবে।

এই ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে, বিনিয়োগকারীরা ইকুইটি থেকে বেরিয়ে স্বর্ণ ও বৈদেশিক সরকারি বন্ডের মতো নিরাপদ সম্পদে আশ্রয় নিচ্ছে।

উদীয়মান বাজারের মুদ্রা, যেমন দক্ষিণ কোরিয়ার ওন ও থাইল্যান্ডের বাথ মার্কিন ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে। ইয়েনও শক্তিশালী হয়ে 143 এর দিকে উঠেছে, যা অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ লেভেল।

মার্কিন স্টক মার্কেটের আপডেট: ১১ এপ্রিল – S&P 500 ও নাসডাক সূচকের তীব্র দরপতন

যখন ট্রাম্প বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় ওপর পুরোপুরিভাবে আগ্রাসন চালাচ্ছেন, তখন ইউএস ট্রেজারিকে 'বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ সম্পদ' হিসেবে বিবেচনা করা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই সপ্তাহে মার্কিন সরকারু বন্ডের বিক্রির প্রবণতা পুনরায় ফিরে এসেছে—যদিও ৩০ বছর মেয়াদী বন্ডের শক্তিশালী নিলাম মার্কিন ঋণের প্রতি চাহিদা এখনও আছে তা প্রমাণ করেছে। শুক্রবার ১০ বছরের ট্রেজারি ইয়েল্ড ৬ বেসিস পয়েন্ট বেড়েছে, যা আগের দিনের ৯ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা।

কমোডিটি মার্কেটে, অপরিশোধিত তেলের দাম টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে হ্রাস পেয়েছে, অপরদিকে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

S&P 500 সূচকের টেকনিক্যাল চিত্রে রিবাউন্ডের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ক্রেতাদের প্রধান লক্ষ্য হবে $5,356 রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করা। সূচকটির দর এই লেভেল অতিক্রম করলে $5,399 পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির দেখা যেতে পারে এবং $5,443 পর্যন্ত বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও মজবুত করবে।

যদি ঝুঁকি গ্রহণ না করার প্রবণতা আবারও ফিরে আসে, তাহলে $5,318 লেভেলে প্রথম সাপোর্ট খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। এই লেভেল ব্রেক করা হলে সূচকটি দ্রুত $5,282 এবং এরপর $5,226 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account