বিটকয়েন এবং ইথেরিয়ামের মূল্য এখনো ঊর্ধ্বমুখী হতে এবং বুলিশ প্রবণতায় ফিরে আসতে সংগ্রাম করছে—এপ্রিল মাস থেকে এই দুটি টোকেনের মূল্য যেই সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে অবস্থান করছে, তার নিম্ন সীমার দিকে ধারাবাহিকভাবে তীব্র দরপতনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী ও ট্রেডারদের সতর্ক করে চলেছে। এর মধ্যেও, ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটের প্রতি সম্ভাব্য রিটেইল ট্রেডারদের আগ্রহ বাড়ছে।
গুগলের সার্চ ডেটা অনুযায়ী, ২০২৫ সালএর মার্চে "Bitcoin" শব্দটির সার্চ ইনডেক্স 34-এ পৌঁছেছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ ফলাফল। গুগল সার্চ ভলিউম 0 থেকে 100 স্কেলে পরিমাপ করা হয়, যেখানে 100 হলো নির্ধারিত সময়ে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা। সর্বশেষ এই ইনডেক্স 100-এ পৌঁছেছিল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে "Bitcoin" শব্দের সার্চ ইনডেক্স ছিল যথাক্রমে 27 এবং 31। এর মানে হলো মাসিক ভিত্তিতে সার্চ ভলিউম 26% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে পর্যবেক্ষণকৃত ধারাবাহিক পতনের পর একটি বিপরীতমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
একইভাবে, মার্চ মাসে "ইথেরিয়ামের" শব্দটির জন্য গুগল সার্চ ইনডেক্স 19-এ পৌঁছেছে, যা ১৬ ফেব্রুয়ারির পর সামান্য বৃদ্ধি নির্দেশ করে এবং এটিও 2025 সালের সর্বোচ্চ ফলাফল। গুগল সার্চ ভলিউম এখানে একই 0 থেকে 100 স্কেলে মাপা হয়। ইথেরিয়ামের সর্বোচ্চ ইনডেক্স 100 ছিল ২০২১ সালের মে মাসে।
যদিও মার্চ মাসে বিটকয়েন ও ইথেরিয়ামের গুগল সার্চের বৃদ্ধি এখনো আগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনেক কম, তবে এটি রিটেইল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুনরায় আগ্রহ জেগে উঠার একটি সম্ভাব্য সংকেত। পাশাপাশি, ক্রিপ্টো মার্কেটের অস্থিরতা সত্ত্বেও দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি এখনও ইতিবাচক রয়ে গেছে। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে একটি অ্যাসেট ক্লাস হিসেবে স্বীকৃতি বৃদ্ধি, ব্লকচেইন প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশ এবং ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ক্রিপ্টোকারেন্সির ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রির কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, সম্প্রতি বিটকয়েনের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুনভাবে ঘোষিত শুল্ক নীতির প্রভাব থাকতে পারে, যা বিটকয়েনকে "ডিজিটাল স্বর্ণ" এবং "মূল্য ধরে রাখার মাধ্যম" হিসেবে পুরনো আখ্যার পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছে—বিশেষ করে ভূরাজনৈতিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক উত্তেজনার সময়ে। এই তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে BTC-to-SPX রেশিও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে—২ এপ্রিল নতুন বাণিজ্য নীতিমালার ঘোষণার পর থেকে 8%-এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অন্যান্য অ্যাসেটের—বিশেষ করে স্বর্ণের—গভীর বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তামূলক পরিস্থিতিতে স্বর্ণই এখনো প্রধান নিরাপদ বিনিয়োগ এবং মূল্য ধরে রাখার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।
বিটকয়েনের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
বর্তমানে ক্রেতারা বিটকয়েনের মূল্যকে $85,000 লেভেলে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে, যার ফলে এটির মূল্যের $86,200 এবং এরপর $87,700-এ পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। সর্বোচ্চ টার্গেট $88,100 এর জোন — এই লেভেল ব্রেকআউট করে মূল্য উপরের দিকে গেলে মার্কেটে বিয়ারিশ প্রবণতা শেষ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। যদি বিটকয়েনের দরপতন ঘটে, তাহলে $83,800 লেভেলে ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য এই লেভেলের নিচে ফেরত এলে BTC-এর মূল্য দ্রুত $82,600 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে এবং চূড়ান্ত টার্গেট হবে $81,500 জোন।
ইথেরিয়ামের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
$1,602 লেভেলের ওপরে স্পষ্ট কনসোলিডেশন দেখা গেলে ইথেরিয়ামের মূল্য $1,641 পর্যন্ত উঠতে পারে। সর্বোচ্চ টার্গেট $1,681 এর জোন — এই লেভেল ব্রেকআউট করে মূল্য উপরের দিকে গেলে মার্কেটে বিয়ারিশ প্রবণতা শেষ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। যদি ইথেরিয়ামের দরপতন ঘটে, তাহলে $1,561 লেভেলে ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য এই লেভেলের নিচে চলে গেলে ETH-এর মূল্য দ্রুত $1,523 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে এবং সর্বনিম্ন টার্গেট হবে $1,478 এর লেভেল।