আজ গুড ফ্রাইডে, যেটি বিশ্বের সব খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর জন্য একটি পবিত্র দিন। ইস্টার মানদের ছুটির কারণে মার্কেটে ট্রেডিং কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, তবে এটি মার্কেটের ট্রেডারদের বর্তমান আচরণের মূল কারণ নয়। চলুন বিষয়টি একটু গভীরভাবে দেখা যাক।
বাণিজ্য সংক্রান্ত মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন ধীরে ধীরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক দাবিদাওয়া ও হুমকিতে চলে এসেছে। কার্যত দুই পক্ষের মধ্যেই আলোচনার সম্ভাবনা এখন এক অচলাবস্থায় পৌঁছেছে। কেউই ছাড় দিতে রাজি নয়, তবে শেষমেশ হয়তো একটি আপসের পথ খুঁজতে হবে—এটাই বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর বিশ্বাস, আর এ কারণেই মার্কেটে এখন 'প্রতীক্ষা ও দেখার' মনোভাব বিরাজ করছে।
সপ্তাহ শেষে মার্কেট সেন্টিমেন্ট কিছুটা মিশ্র হয়ে উঠেছে, তবে বাণিজ্য আলোচনাই এখনো মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় "বড় অগ্রগতি"র ঘোষণা দিয়েছেন এবং চীনের সঙ্গেও একটি চুক্তি করার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের প্রতি কটাক্ষ এবং সুদের হার কমানোর আহ্বান মার্কেটে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। একদিকে মার্কেটের ট্রেডাররা বুঝে গেছে যে বেইজিং বা ওয়াশিংটন কেউই নিজেদের জাতীয় অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় না। অন্যদিকে, উত্তেজনা এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়নি। যখনই একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য চুক্তি হবে, তখন মার্কেটে শক্তিশালী (সম্ভবত ইতিবাচক) মুভমেন্ট দেখা যাবে।
তাহলে মার্কেট কেন স্থবির অবস্থায় রয়েছে?
উত্তরটা সহজ: মার্কেটের ট্রেডাররা এখন পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির অপেক্ষায় আছে। এবং সেই চুক্তি তখনই হবে, যখন উভয় পক্ষ নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। এই প্রেক্ষাপটে, আক্রমণাত্মকভাবে অ্যাসেটের মূল্য নিম্নমুখী করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ — কারণ শর্ট পজিশন বড় ধরনের লোকসানে রূপ নিতে পারে। তবে বর্তমান অনিশ্চয়তা এবং সংঘাতের সমাধান না হওয়ায় এখনই বড় অংকের ক্রয় করাও ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও, আমি মনে করি কিছু ট্রেডার ইতোমধ্যেই নীরবে স্টক এবং কমোডিটি অ্যাসেটে পজিশন ওপেন করছে, তারা আশাবাদী যে মার্কেট শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে। আমার মতে, এটি একটি যুক্তিসঙ্গত এবং ন্যায্য কৌশল।
আজ মার্কেটে কী প্রত্যাশা করা যায়?
ইস্টার মানডের ছুটির আগে কম ট্রেডিং কার্যক্রম বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ICE ইনডেক্স অনুযায়ী, মার্কিন ডলার 99.00 লেভেলের একটু উপরে কনসোলিডেট করতে পারে। প্রধান ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোও সঙ্কীর্ণ সাইডওয়েজ রেঞ্জে ট্রেড করতে পারে। স্বর্ণের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা থামতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি চুক্তি ঘোষণা হলে স্বর্ণের দাম $3000 লেভেলের নিচে নেমে যেতে পারে। অপরদিকে, ইরানকে ঘিরে উত্তেজনার কারণে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে, এবং এই প্রবণতা আগামী সপ্তাহের শুরুতে আরও শক্তিশালী হতে পারে।
সামগ্রিকভাবে আমি মার্কেটের পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদী। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দ্রুত একটি আপসমূলক সমাধান বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে নাটকীয়ভাবে বদলে দিতে পারে।
দৈনিক পূর্বাভাস:
বিটকয়েন
টোকেনটি বর্তমানে 83,024.25–86,045.15 রেঞ্জে কনসোলিডেশন করছে। এই রেঞ্জের নিচের সীমানার দিকে একটি কারেকশন হতে পারে, যেটি সম্ভাব্যভাবে ক্রয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে, মূল্যের রিবাউন্ড হয়ে 86,045.15 এর টার্গেট পর্যন্ত যেতে পারে। 83,201.95 এর আশেপাশে বাই এন্ট্রি লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে।
ইথেরিয়াম
ইথেরিয়ামও 1,560.25–1,663.70 রেঞ্জে কনসোলিডেট করছে। এটির মূল্য এই রেঞ্জের ঊর্ধ্ব সীমার দিকে উঠতে পারে। 1,594.18 একটি সম্ভাব্য বাই লেভেল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।