সর্বশেষ নিয়মিত ট্রেডিং সেশনের শেষে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টক সূচকগুলো সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। S&P 500 সূচক 0.40% বৃদ্ধি পেয়েছে, নাসডাক 100 সূচক 0.39% বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ 0.28% বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে, নিয়মিত সেশন শেষ হওয়ার পর মার্কিন স্টক সূচকের ফিউচারগুলোতে পতন দেখা যায়, কারণ ট্রেডাররা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি ঘিরে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায় — যা এখনো আইনি লড়াই, ধীরগতির আলোচনার প্রক্রিয়া এবং নীতিগত পরিবর্তনের মধ্যে জড়িত। এই দরপতন মার্কেটের ট্রেডারদের উদ্বেগকে সামনে নিয়ে আসে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির কোনো সুস্পষ্ট কৌশল না থাকায় বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করছে। একইসাথে বিনিয়োগকারীরা কর্পোরেট খাতের অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। বড় কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ আর্থিক ফলাফল ও একত্রীকরণ/অধিগ্রহণ সংক্রান্ত খবরে স্টক মূল্যের উপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও উপেক্ষা করা যায়নি — জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কেটে মূল্যের দিক নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হয়ে ওঠে।
S&P 500-এর ফিউচার কন্ট্র্যাক্টগুলো 0.2% কমে যায়। এশিয়ার সূচক 0.7% হ্রাস পায়, যার ফলে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মাসিক লাভ হারিয়েছে। ইউরোপীয় স্টক সূচকগুলো প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। মার্কিন ডলার এবং ট্রেজারি বন্ডগুলো সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট গতকাল বলেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে এমনিতেই বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে এই মন্তব্য সরাসরি ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে প্রভাব ফেলে। বিনিয়োগকারীরা বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন করে চরম মাত্রায় পৌঁছানোর আশঙ্কায় আবারও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বিক্রি শুরু করে দেয়, যার ফলে স্টক সূচকগুলোতে দরপতন ঘটে এবং জাপানি ইয়েন ও সুইস ফ্রাঁ-এর মতো নিরাপদ মুদ্রাগুলো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তবে বেসেন্টের বক্তব্যে বিস্তারিত কিছু ছিল না, যার ফলে আরও গুজব ছড়ায়। এখনও এতো স্পষ্ট নয় যে কোন বিষয়গুলো আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার মূল কারণ — হয়ত বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি সুরক্ষা, মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য চীনা বাজারে প্রবেশাধিকার, অথবা মার্কিন কৃষিপণ্যের আমদানির পরিমাণ বিষয়ক মতভেদ এর পেছনে দায়ী।
ব্রাউন ব্রাদার্স হ্যারিম্যান অ্যান্ড কোং-এর হেড অব গ্লোবাল মার্কেট স্ট্র্যাটেজি উইন থিন বলেন, "যাই ঘটুক না কেন, ট্রেডাররা বুঝে গেছে সামনে দীর্ঘ অনিশ্চয়তার সময় অপেক্ষা করছে। শুল্ক বহাল রাখা স্থবিরতা ও মূল্যস্ফীতির দ্বৈত ঝুঁকি বাড়ায় এবং ডলার ও ইকুইটি—দুটোর উপরেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।"
আজ ট্রেডারদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের কোর পারসোনাল কনজাম্পশন এক্সেপেন্ডিচার প্রাইস ইনডেক্সের (PCE) Price Index-এর দিকে — এটি হলো ফেডারেল রিজার্ভের পছন্দের মূল মূল্যস্ফীতির পরিমাপক, যা খাদ্য ও জ্বালানি ব্যতীত হিসাব করা হয়। এটি অর্থনীতির অবস্থা ও সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেবে। যদিও এপ্রিলের প্রতিবেদন উপর ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব সামান্য থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসগুলোতে এই নীতিগুলোর প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
S&P 500-এর টেকনিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গি:
আজ ক্রেতাদের মূল লক্ষ্য হবে $5921 লেভেল ব্রেক করা। এটি আরও ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম তৈরি করবে এবং $5933 এর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করে দেবে। পাশাপাশি, ক্রেতাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট হবে $5967 লেভেলের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা, যা তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে।
যদি মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রতি অনাগ্রহের কারণে সূচকটির দর নিম্নমুখী হয়, তাহলে $5897 লেভেল প্রতিরক্ষার জন্য ক্রেতাদের অবস্থান করতে পারে। এই লেভেলটি ব্রে করা হলে সূচকটি দ্রুত $5877 এবং তারপরে $5854 লেভেলের দিকে নেমে যেতে পারে।