শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যও তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, যা মূলত মার্কিন শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের খুব দুর্বল ফলাফলের কারণে ঘটেছে। তবে এটাও উল্লেখযোগ্য যে, রাতের সেশনেই পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল এবং সকালে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশের মাধ্যমে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও শক্তিশালী হয়েছে। তাই শুক্রবারের সবকিছুই অন্তত স্থানীয়ভাবে ব্রিটিশ মুদ্রার পক্ষে কাজ করেছে। বৈশ্বিকভাবে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে একাধিক নেতিবাচক বিষয় কাজ করায় পাউন্ডের ক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত অনুকূল। আমরা প্রায় প্রতিদিনই এ বিষয়টি উল্লেখ করি। তবে আপাতত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে সাইডওয়েজ মুভমেন্টের সমাপ্তি ঘটেছে। শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3543 লেভেল পর্যন্ত উঠেছিল—যা এর আগে দুইবার টেস্ট করা হয়েছে। সুতরাং, এ লেভেল থেকে তৃতীয়বার রিবাউন্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে থাকার প্রবণতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার 5-মিনিটের চার্টে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল, যেগুলো নতুন ট্রেডাররা তুলনামূলকভাবে নিরাপদভাবে ব্যবহার করতে পারত। প্রথমে, মূল্য 1.3466–1.3475 এরিয়ার নিচ থেকে রিবাউন্ড করেছিল, তবে এই সেল সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়। পরে পেয়ারটির মূল্য এই এরিয়া ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হয় এবং পরবর্তীতে উপর থেকে রিবাউন্ড করে, যদিও তা খুব স্পষ্টভাবে ঘটেনি। দ্বিতীয় সিগন্যালটি মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র 15 মিনিট আগে গঠিত হয়েছিল, তাই কেবল স্টপ লস ব্যবহার করেই এই সিগন্যাল থেকে ট্রেড করা যেত। মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের ধারাবাহিকভাবে হতাশাজনক ফলাফলের পর অবশেষে প্রয়োজনীয় ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যায় এবং এই পেয়ারের মূল্য 1.3529–1.3543-এর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে, GBP/USD পেয়ারের মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে রয়েছে। তবে হায়ার টাইমফ্রেমে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান। তাই সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ঘন্টাভিত্তিক চার্টে যে মুভমেন্ট দেখা গেছে, তা সামগ্রিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার একটি সাময়িক বিরতি মাত্র। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কোনো কারণ নেই, তাই আমরা আশা করছি যে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট শেষ হবে এবং আবারো পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হবে।
সোমবার নতুন করে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, যেহেতু মূল্য ইতোমধ্যে তিনবার 1.3529–1.3543 জোনে পৌঁছেছে কিন্তু এটি ব্রেক করতে পারেনি। তাই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে, এবং সোমবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট না থাকায় স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
5-মিনিট চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763। সোমবার যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদন প্রকাশনা নির্ধারিত নেই, তাই দিনের বেলায় ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো তেমন কিছু থাকবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।