logo

FX.co ★ যুক্তরাজ্যে সরকার কর্তৃক ঋণ গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন ঘটেছে

যুক্তরাজ্যে সরকার কর্তৃক ঋণ গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন ঘটেছে

বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাজ্য সরকার পূর্বাভাসের চেয়ে £7.2 বিলিয়ন বেশি ঋণ গ্রহণ করেছে—এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। এটি অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভসের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ, যিনি বর্তমানে প্রকাশিতব্য বাজেট পরিকল্পনা প্রস্তুত করছেন যার লক্ষ্য হলো আর্থিক খাত পুনরুদ্ধার করা। যদিও ঋণগ্রহণে এই আকস্মিক বৃদ্ধি পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত ছিল না, তবে এটি সরকারের ঘোষিত সরকারি ঋণ গ্রহণের মাত্রা স্থিতিশীল করা এবং বাজেট ঘাটতি হ্রাস করার লক্ষ্যমাত্রাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস এবং দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এই মুহূর্তে বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনাগুলোর জন্য অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড যদি মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও দীর্ঘ সময় ধরে সুদের হার উচ্চ পর্যায়ে ধরে রাখে, তাহলে এতে দেশটির সরকারের ঋণ গ্রহণের ব্যয় বেড়ে যাবে এবং আর্থিক খাতের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে, যা দেশটির গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলিতে বিনিয়োগ হ্রাস ঘটাতে পারে।

যুক্তরাজ্যে সরকার কর্তৃক ঋণ গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন ঘটেছে

রিভসের আসন্ন বাজেট পরিকল্পনাটি বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকগণ সতর্কভাবে পর্যালোচনা করবে। আর্থিক খাত পুনরুদ্ধারের জন্য তাঁর পরিকল্পনার বিশ্বাসযোগ্যতা ও বাস্তবতাই মূলত ব্রিটিশ মুদ্রার স্থিতিশীলতা ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার বিষয়টি নির্ধারণ করবে। রিভস রাজস্ব বৃদ্ধি ও ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপের প্রস্তাব দিবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে স্থিতিশীল আর্থিক নীতিমালা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা তার জন্য অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির বাজেট ঘাটতি বর্তমানে £99.8 বিলিয়নে পৌঁছেছে, যা অফিস ফর বাজেট রেসপন্সিবিলিটি (OBR)-এর মার্চ মাসের পূর্বাভাস £92.6 বিলিয়নের চেয়েও বেশি। শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসেই যুক্তরাজ্য সরকার £20.2 বিলিয়নের ঋণ গ্রহণ করেছে, যা করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ঋণগ্রহণ। মূলত সরকারি ঋণের উপর উচ্চ সুদ পরিশোধ করার কারণে পরিস্থিতির এইরূপ অবনতি ঘটেছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, উচ্চ সুদের হার, কল্যাণ খাতে ব্যয় হ্রাস স্থগিত রাখা, এবং OBR-এর পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত উৎপাদনশীলতা সংশোধনের ফলে রিভসকে প্রায় £35 বিলিয়ন অতিরিক্ত অর্থ খুঁজে বের করতে হবে—যা শুধুমাত্র ব্যয় ও আয়ের ভারসাম্য নিশ্চিত করার জন্য নির্ধারিত £9.9 বিলিয়ন রিজার্ভ পূরণ করতেই লাগবে।

ঘাটতির পরিমাণ OBR-এর পূর্বাভাস ও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি, যদিও এই মাসের শুরুতে এক সংশোধনের মাধ্যমে রিভস অতিরিক্ত £2 বিলিয়ন VAT রাজস্ব পেয়েছেন। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স (ONS) জানিয়েছে, এই সংশোধন মূলত HM রেভিনিউ অ্যান্ড কাস্টমস-এর পক্ষ থেকে বিতরণ করা ভুল ভ্যাট সংক্রান্ত প্রতিবেদনের কারণে করা হয়েছে।

ONS আরও জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে বাজেট ঘাটতি ছিল এই রেকর্ড চালুর (১৯৯৩) পর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক ঘাটতি এবং এটি OBR-এর পূর্বাভাস £20 বিলিয়নের প্রায় কাছাকাছি ছিল। অর্থনীতিবিদরা গড় পূর্বাভাস দিয়েছিলেন £20.8 বিলিয়ন।

উল্লেখ্য, উপরের সব ঘটনাপ্রবাহের ফলে পাউন্ডের সামান্য দরপতন ঘটেছে।

বর্তমানে GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের প্রথম লক্ষ্য হবে এই পেয়ারের মূল্যকে $1.3405-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেলে পুনরুদ্ধার করা। এটিই এই পেয়ারের মূল্যের $1.3440-এর দিকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে, যার উপরে যাওয়ার অনেক কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে $1.3485 এর আশেপাশের লেভেল। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের দরপতন ঘটে, তাহলে বিক্রয়ের প্রবণটা বাড়লে বিক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যকে সম্ভবত $1.3370 লেভেলে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জ ব্রেকআউট করে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি বুলিশ পজিশনের জন্য বড় একটি আঘাত হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্যকে $1.3335 পর্যন্ত নামিয়ে আনবে, যার পরে $1.3295 পর্যন্ত দরপতন সম্প্রসারণের সম্ভাবনাও থাকবে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account