গতকাল মার্কিন স্টক সূচকগুলোতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে লেনদেন শেষ হয়েছে। S&P 500 সূচক 0.58% বেড়েছে, এবং নাসডাক 100 সূচকে 0.89% বৃদ্ধি পেয়েছে। ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক 0.31% বৃদ্ধি পেয়েছে।

এশিয়ার স্টক সূচকগুলোর পাশাপাশি ইউরোপীয় ও মার্কিন ইক্যুইটির ফিউচার মার্কেটেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে, এর পেছনের কারণ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যকার সম্ভাব্য বৈঠকের পরিকল্পনাকে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ কিছুটা কমাতে সাহায্য করেছে। মার্কিন ট্রেজারি বন্ড মার্কেট মূলত স্থিতিশীল ছিল, কারণ বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির প্রধানের মধ্যকার আলোচনার সম্ভাবনা ট্রেডারদের উৎসাহিত করেছে। দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য অনিশ্চয়তায় ক্লান্ত বিনিয়োগকারীরা এখন এই বৈঠককে একটি সমাধানে আসার ব্যাপারে আশার আলো হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে ট্রাম্প-শি বৈঠকের সম্ভাবনা প্রযুক্তি খাতের ব্যাপক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। তবে এই ইতিবাচক প্রবণতা সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীরা সতর্ক রয়েছেন। বাণিজ্যযুদ্ধের প্রকৃত সমাধান বেশ জটিল ও দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া, এবং যেকোনো হতাশাজনক ঘটনা বা মন্তব্যের মার্কেটে আবারও নেতিবাচক প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে।
আজ প্রকাশিতব্য মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ফেডারেল রিজার্ভের পরবর্তী নীতিমালা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যদি দেশটির মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, তাহলে ফেড আরও সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করতে পারে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং স্টক মার্কেটে পুনরায় উচ্চ মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। বিপরীতে, মুদ্রাস্ফীতির হার কমে গেলে ফেড আরও সহনশীল নীতিমালার পক্ষে অবস্থান নিতে পারে।
পূর্বে যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, MSCI এশিয়া সূচক প্রায় 0.4% বেড়েছে এবং আবারও সূচকটিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। এর পেছনে প্রযুক্তি খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল; দক্ষিণ কোরিয়ার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসকে হাইনিক্স ইনকর্পোরেটেডের শেয়ারের মূল্য 6.9% বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনেও সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ দেশটি প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতায় আরও মনোযোগ দিচ্ছে। প্রযুক্তি-ভিত্তিক স্টার 50 সূচক 3% এরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তেলের দাম কমে গেছে। মার্কিন ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে, আর স্বর্ণের দাম হ্রাস পেয়েছে। জাপানের অর্থমন্ত্রী যখন ইঙ্গিত দেন যে প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির প্রস্তাবিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য দেশটিকে অতিরিক্ত বন্ড ইস্যু করতে হতে পারে, তখন ইয়েন বিক্রির প্রবণতা বৃদ্ধির ফলে টানা ষষ্ঠ সেশনে USD/JPY পেয়ারের মধ্যে ইয়েন দুর্বল হয়েছে।

S&P 500-এর টেকনিক্যাল চিত্রের দিক থেকে আজকের ট্রেডিংয়ে ক্রেতাদের জন্য প্রধান লক্ষ্য থাকবে $6,769 রেজিস্ট্যান্স লেভেলটি ব্রেক করানো। এটি সফলভাবে ব্রেক করতে পারলে পরবর্তীতে সূচকটির $6,784 লেভেলে দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি, ক্রেতাদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে সূচকটির মূল্য $6,801 লেভেলের উপরে ধরে রাখা, যা ক্রেতাদের দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করবে। যদি ঝুঁকি গ্রহণের আগ্রহ হ্রাস পায় এবং মার্কেটে নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়, তাহলে সূচকটির দর $6,756 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয়ভাবে হতে হবে। এই লেভেল ব্রেক করে সূচকটির দর নিম্নমুখী হলে খুব দ্রুতই $6,743 পর্যন্ত দরপতন হতে পারে এবং এরপর $6,727 লেভেলের দিকে দরপতনের সম্ভাবনা উন্মোচিত হতে পারে।
