
মঙ্গলবার, GBP/JPY পেয়ারের দরপতন হয়েছে এবং এক সপ্তাহব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তি ঘটে এই পেয়ারের মূল্য 202.00 লেভেলে নেমে এসেছে, কারণ জাপানি ইয়েনের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জাপানের অর্থমন্ত্রী মিনোরু কিয়ুচি বলেছেন, বিনিময় হার যেন বাস্তব অর্থনৈতিক মৌলিক উপাদানের প্রতিফলন ঘটায় এবং স্থিতিশীল থাকে — এ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে তিনি আরও জানান, এটি জাতীয় অর্থনীতির ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলছে, তিনি তা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। এই ধরণের মন্তব্য ইয়েনের দুর্বলতা নিয়ন্ত্রণে সরকারি হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এছাড়া, এই সপ্তাহে নির্ধারিত ব্যাংক অব জাপানের নীতিনির্ধারণী বৈঠকের আগে মার্কেটে ট্রেডিং পজিশনের পুনর্বিন্যাস হতে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে, ইয়েন-ভিত্তিক বিয়ারিশ পজিশনধারীরা তাদের শর্ট পজিশন হ্রাস করতে শুরু করেছে, যা GBP/JPY পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে।
ব্যাংক অব জাপানের নীতিগত সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার জানা যাবে। যদিও দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির নেতৃত্বে বড় পরিসরে সরকারি ব্যয়ের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তারপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান নীতিগত অবস্থান অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জাপানের পরিষেবা খাতের মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বরে আবারও বেড়েছে — যা পরপর দুই মাস বৃদ্ধির পেয়েছে। তদুপরি, ভোক্তা মূল্যস্ফীতি (CPI) গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যাংক অব জাপানের ২%-এর লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা আগামী বছরের শুরুতে সুদের হার বাড়ার সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে।
ব্যাংক অব জাপানের আরও হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণের পূর্বাভাস ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের শীঘ্রই আরও নমনীয় মুদ্রানীতি প্রণয়নের সম্ভাবনার সাথে প্রবলভাবে বিরোধ সৃষ্টি করেছে। সেইসাথে, নভেম্বরে প্রকাশিতব্য শরৎকালীন বাজেটের আগে যুক্তরাজ্যের রাজস্ব খাত নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগ পাউন্ডের ওপর চাপ বাড়িয়ে তুলছে এবং GBP/JPY পেয়ারের আরও দরপতনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে, ধীরে ধীরে 202.00 এর মূল মনস্তাত্ত্বিক লেভেলের নিচে এই পেয়ারের দরপতন অনেকটা বাস্তবসম্মত একটি দৃশ্যপট হিসেবে সামনে আসছে।
টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, GBP/JPY পেয়ারের 202.00-এর মনস্তাত্ত্বিক লেভেলের নিচে দরপতনের সম্ভাবনা তখনই নিশ্চিত হওয়া যাবে, যদি রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স (RSI) নেগেটিভ হতে শুরু করে। বর্তমানে, 202.00-এর রাউন্ড লেভেলটি শক্তিশালী সাপোর্ট হিসেবে কাজ করছে, এবং নিকটতম রেজিস্ট্যান্স জোনটি 14-দিন EMA (এক্সপোনেনশিয়াল মুভিং অ্যাভারেজ) এর আশেপাশে 202.60-এ অবস্থিত, যা অতিক্রম করলে এই পেয়ারের মূল্যের 203.00-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
