বুধবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বুধবার GBP/USD পেয়ার তীব্র দরপতনের শিকার হয়, তারপর কিছুটা পুনরুদ্ধার ঘটে, এবং পরবর্তীতে আবার একটি নতুন নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়। এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ইতোমধ্যেই ব্রেক করেছে, ফলে অদূর ভবিষ্যতে একটি কারেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা আজ নির্ধারিত ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের বৈঠকে আর্থিক নীতিমালা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়টি অনেকটা স্পষ্ট করে দিয়েছে। এখন প্রায় কোনো সন্দেহ নেই যে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল সুদের হার কমাতে যাচ্ছে, যা ব্রিটিশ মুদ্রার জন্য একটি নেতিবাচক বিষয়। যদিও এই সিদ্ধান্ত আংশিকভাবে মার্কেটে পূর্বেই মূল্যায়িত হয়ে থাকতে পারে, তারপরও আজ কিছুটা দরপতন দেখা যেতে পারে, বিশেষ করে যদি ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ট্রেডারদের প্রত্যাশার তুলনায় আরও বেশি 'ডোভিশ বা নমনীয়' অবস্থান গ্রহণ করে—২০২৬ সাল পর্যন্ত। একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার এখনও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত নভেম্বর মাসের মার্কিন শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল পরস্পরবিরোধী ছিল, তবে সার্বিকভাবে আমরা সেগুলোকে নেতিবাচক হিসেবেই চিহ্নিত করব। সুতরাং, যদি যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার কমে, তাহলে ফেডারেল রিজার্ভের আর্থিক নীতিমালার আরও নমনীয়করণের প্রত্যাশায় মার্কেটে ডলার দরপতন হতে পারে। আজও ট্রেডারদের জন্য একটি ব্যস্ত দিন হতে চলেছে এবং মার্কেটে উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বুধবার সারাদিনে দুইটি সুস্পষ্ট সেল সিগন্যাল গঠিত হয়। যখনই এই পেয়ারের মূল্যের কিছুটা সক্রিয় মুভমেন্ট শুরু হয়েছে, তখন থেকেই কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হতে শুরু করে। এশিয়ার ট্রেডিং সেশনের শুরুতেই এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়া থেকে বাউন্স করে এবং ইউরোপীয় মার্কেটে ট্রেডিং শুরুর সময় পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য পিভট পয়েন্ট থেকে খুব একটা দূরে যেতে পারেনি। যার ফলে নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পেয়েছেন। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই এই পেয়ারের মূল্য 1.3319–1.3331 এরিয়ায় পৌঁছায়, তবে ওই লেভেলটি ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, যা লাভজনক ছিল।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী এখন GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হতে পারে, কারণ এই পেয়ারের মূল্য ইতোমধ্যে ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে। আগেই বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধির জন্য দৃঢ় কোনো মৌলিক ভিত্তি নেই, তাই সামগ্রিকভাবে আমরা কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টেরই প্রত্যাশা করছি। আমরা ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত বৈশ্বিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নতুন করে শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি, যার ফলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্য 1.4000 লেভেলে পৌঁছাতে পারে।
বৃহস্পতিবার, যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.3319–1.3331 এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে নতুন ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করার কথা বিবেচনা করতে পারেন, যেখানে মূল্যের 1.3413–1.3421-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে যদি মূল্য এই এরিয়া অতিক্রম করে নিম্নমুখী হয়, তাহলে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্যের 1.3259–1.3267-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হচ্ছে 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3212, 1.3259-1.3267, 1.3319-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590। বুধবার যুক্তরাজ্যে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফল ঘোষণা করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই দুটি ইভেন্টই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলোর প্রভাবে মার্কেটে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
