সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:

বৃহস্পতিবার খুব বেশি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল আবারও দুর্বল ও পরস্পরবিরোধী ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে ফেডারেল রিজার্ভ আর্থিক নীতিমালা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আরও 'ডোভিশ বা নমনীয়' অবস্থান গ্রহণ করতে পারে। তবে এই অবস্থান বাস্তবায়নে প্রধান বাধা হলো গত কয়েক মাস ধরে ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাওয়া মূল্যস্ফীতি। যদি নভেম্বরে দেশটির ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) আরও বৃদ্ধি পায়, তাহলে এটি ডলারের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হবে, কারণ তখন ফেড আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার সিদ্ধান্তে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থগিত করতে পারে। অপরদিকে, যদি মূল্যস্ফীতির হার কমে যায়, তাহলে ফেড জানুয়ারিতেই মূল সুদের হার কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে মার্কেটে আবারও ডলার বিক্রির প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:

বৃহস্পতিবার অন্তত গুরুত্বপূর্ণ দুটি ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত রয়েছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) বৈঠক বিনিয়োগকারীদের কিছুটা আগ্রহ সৃষ্টি করছে, যদিও ইসিবির আর্থিক নীতিমালায় কোনো পরিবর্তনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ক্রিস্টিন লাগার্ডে ২০২৬ সালে সুদের হার বাড়তে পারে এমন কিছু ইঙ্গিত দিতে পারেন, যা ইউরোর দর বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। অন্যদিকে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের আজকের বৈঠকটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আজই মূল সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, বিশেষ করে যদি বিবেচনা করা হয় যে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি ৩.২%-এ নেমে এসেছে। এছাড়াও, সুদের হার সম্পর্কিত মুদ্রানীতিক কমিটির সদস্যদের ভোটের ফলাফল এবং ২০২৬ সালের ব্যাপারে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পূর্বাভাসও গুরুত্বপূর্ণ হবে। সারসংক্ষেপে, আজ মার্কেটে তিনটি বড় ইভেন্ট রয়েছে যেগুলোকে অত্যন্ত 'গুরুত্বপূর্ণ' হিসেবে বিবেচনা করা যায় এবং সেগুলোর প্রভাবে ফরেক্স মার্কেটে উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট সৃষ্টি হতে পারে।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষদিকের ট্রেডিংয়ে, EUR/USD এবং GBP/USD– এই দুটি প্রধান কারেন্সি পেয়ারের মূল্যই সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল এবং ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট দ্বারা প্রভাবিত হবে। ট্রেডাররা নিকটবর্তী টেকনিক্যাল লেভেল ও এরিয়া থেকে ট্রেড করার সুযোগ খুঁজতে পারেন। ইউরোর জন্য এই এরিয়াটি হলো 1.1745–1.1754 এবং পাউন্ডের জন্য এটি 1.3319–1.3331 এরিয়া। তবে, মনে রাখতে হবে যে সারাদিনজুড়ে উভয় পেয়ারের মূল্যই হঠাৎ করে দিক পরিবর্তন করতে পারে এবং মার্কেটে বেশ উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করবে বলা প্রত্যাশা করা যায়।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
