এই দরপতন ঠিক তখনই ঘটে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে তিনি আশা করছেন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান শীঘ্রই সুদের হার কমাবেন। এটি আরও একটি ইঙ্গিত যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফেডের এমন একজন চেয়ারম্যান চাইছেন, যিনি সুদের হার কমাবেন। আপনাদের মনে করিয়ে দেই যে, ফেড প্রধান হিসেবে জেরোম পাওয়েলের সময়সীমার মেয়াদ দ্রুত শেষ হয়ে আসছে। ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, "আমি চাই নতুন ফেড চেয়ারম্যান তখনই সুদের হার কমাক, যখন মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে—কোনো কারণ ছাড়াই মার্কেট ধ্বংস হোক তা আমি চাই না।" তিনি আরও বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন, "যে এই মতের সাথে একমত না, সে কখনোই ফেডের চেয়ারম্যান হতে পারবে না!"

ট্রাম্প অনেকবার বলেছেন যে, তিনি সাম্প্রতিক এক প্রবণতার সমাপ্তি ঘটাতে চান—যেখানে অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফলের পরও, মুদ্রাস্ফীতির ভয়ে মার্কেটে অ্যাসেট বিক্রির প্রবণতা শুরু হয়, যা সুদের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, "আগে যখন কোনো ভালো খবর প্রকাশ হতো, মার্কেট উপরের দিকে যেত। আর এখন যখন ভালো সংবাদ আসে, মার্কেট নিচে নামে, কারণ সবাই ধরে নেয় ফেড এবার সুদের হার বাড়াবে।"
এই কারণে গতকাল ডলার দরপতনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যগুলোর একটি স্পষ্ট সম্পর্ক লক্ষ্য করা গেছে। সুদের হার কমানোর ব্যাপারে তাঁর ধারাবাহিক আহ্বান নিছক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক একটি রাজনৈতিক কৌশল। বিনিয়োগকারীরা একে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার উপর চাপ হিসেবেই দেখেছেন, যার ফলে ডলারের আকর্ষণ হ্রাস পেয়েছে। তবে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই এই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে সে ব্যাখ্যা দেওয়া ঠিক হবে না। জিডিপি প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল সত্ত্বেও, বছরের শেষভাগে মার্কিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ এর মধ্যে রয়েছে সরকারি শাটডাউন, মুদ্রাস্ফীতির চাপ, বাণিজ্যযুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো বিষয়। এই বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের উৎসাহকে সীমিত করেই রাখবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মুদ্রাস্ফীতির সাথে সমন্বয়ের পরবর্তী তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক ভিত্তিতে ৪.৩% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গেছে।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি ফেডের চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ৩ থেকে ৪ জনে সংকুচিত করেছেন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। কেভিন হ্যাসেট (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক) এবং কেভিন ওয়ার্শ (সাবেক ফেড গভর্নর বোর্ড সদস্য) এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, তিনি ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাঁর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পরিস্থিতি অনুযায়ী, ক্রেতাদের এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1805 লেভেল ব্রেক করিয়ে মূল্যকে ঊর্ধ্বমুখী করা। এই পেয়ারের মূল্য কেবল এই লেভেল অতিক্রম করলেই মূল্যের 1.1830 লেভেলে পৌঁছানোর সম্ভাবনার দিকে মনোনিবেশ করা যেতে পারে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1860 পর্যন্ত উঠতে পারে—তবে বড় বিনিয়োগকারীদের সমর্থন ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে 1.1901 লেভেল। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে বড় ক্রেতারা সম্ভবত মূল্য 1.1775 লেভেলে থাকা অবস্থায় সক্রিয় হবে। যদি বড় ক্রেতারা সেখানে সক্রিয় না হয়, তাহলে মূল্যের 1.1754 লেভেলে পৌঁছানোর জন্য অপেক্ষা করা, অথবা 1.1729 থেকে লং পজিশন ওপেন করা উচিত হবে।
GBP/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র বিবেচনায়, পাউন্ড ক্রেতাদের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3555 লেভেল ব্রেক করানো উচিত। এই পেয়ারের মূল্য কেবল এই লেভেল অতিক্রম করলেই মূল্যের 1.3590 লেভেলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে, যা অতিক্রম করা বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3622 লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে। বিপরীতে, যদি এই পেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে মূল্য 1.3505 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে মূল্য সেই রেঞ্জ ব্রেক করে GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3475 লেভেল পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, এবং সেখানে থেকে 1.3445 পর্যন্ত আরও দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
